অনেকেই আমাকে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে,রিলেশনে গেলে বয়সের পার্থক্য কেমন হওয়া উচিত?রিলেশনে এতো ঝগড়া কেন হয়?আর কেনই বা রিলেশনগুলো টিকে না?প্রেম করে কি বিয়ে করা উচিত ? বিয়ের পর কি প্রেমিক আর প্রেমিকা কি আগের মতোই থাকে? নাকি তারা পালটায় যায় ?
কেনই বা চেঞ্জ হয় তারা? কেনো ডিভোর্স বেশি হচ্ছে আজকাল?আর প্রেমের বিয়েতেই কেনো বেশি ? কেনো মুরব্বিরা বলে,প্রেমের বিয়ে টিকে নাহ ?
এমন বহু প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় মাঝে মাঝে।উত্তরগুলো আমি আমার মতো করেই দেই।কতটা বলতে পারি জানিনা,যা বুঝি তাই বলি...
১/ বয়সের পার্থক্য আসলে ডিপেন্ড করে।যেমন আমার পারসোনালি সেইম এইজ পছন্দ নাহ।তাই বলে কি তারা হ্যাপি নাই? আছে।অনেক ক্ষেত্রে মেয়েও ছেলের চেয়ে বড় হয়।আবার বয়সে অনেক ডিসটেন্স ও থাকে।তারাও কিন্তু হ্যাপি হয়।মূল কথা হচ্ছে,যাকে ভালোবাসো তাকে তুমি কতটুকু বুঝো,তুমি তার সাথে কতটুকু কমফোর্ট,তোমাদের বোঝাপোড়া কেমন।এটাই হচ্ছে ফ্যাক্ট।
আর সেইম এইজে মেয়েরা ইনসিকিউরড ফিল করে তার বিএফ এর ক্যারিয়ার নিয়ে।ছেলেটা যদি তোমাকে সত্যিই মন থেকে ভালোবাসে তাহলে তোমার থেকে বেশি সে নিজেই তার ক্যারিয়ার নিয়ে বেশি চিন্তা করবে।সম্পর্ক টা অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত।যার সাথে দুনিয়ার সব শেয়ার করা যায় কোনো সংকোচ ছাড়াই।
২/ রিলেশনে ঝগড়া হবেই।মান অভিমান হবেই।এটা নরমাল।কিন্তু তাই বলে ইগো দেখায় বসে থাকতে নেই।একটা স্যরি যখন সমাধান তখন কাছের মানুষটাকে স্যরি শব্দটা বলতে লজ্জা কোথায় ?
৩/ রিলেশন টিকে না অনেক কারণে।ইগো,ভুল বুঝাবুঝি,সন্দেহ।এগুলা ছোটখাটো কারন।কিন্তু চরিত্রে যদি সমস্যা থাকে সেখানে রিলেশন রাখার প্রশ্নই উঠে নাহ।সরে আসা উচিত।তা অবশ্যই নিজের বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে বিচার করা উচিত।কারো অহেতুক কথা শুনে নয়।
৪/ বিয়ে যদি নাই করতে চান তাইলে প্রেম প্রেম খেলা কেনো ? এমন কোন ইচ্ছা থাকলে অই টাইপ মেয়েদের বা ছেলেদের সাথেই খেলবেন।খেলা শেষ,খোদা হাফেজ।কিন্তু যেই ছেলে বা মেয়েটা আপনাকে নিয়ে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখতেসে তাকে ঠকানোর কোনো অধিকার নেই আপনার।
৫/ মানুষ বদলায়।সময়ের সাথে,বয়সের সাথে,পরিবেশের সাথে,পরিস্থিতির সাথে।এটাই স্বাভাবিক।বিয়ের পর নিশ্চয়ই একটা ছেলে তার কাজ ছেড়ে আপনাকে বারবার ফোন দিবে নাহ বা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলবে নাহ! আর মেয়েটাও নেকু নেকু ভাষায় একটু পর পর বলবে না,বাবু খাইসো? সংসার এ তখন কাজ থাকবে,দায়িত্ব থাকবে।বয়সের সাথে সাথে পাগলামিটা ও পরিবর্তিত হয়।আমরা অনেকেই এটা মেনে নিতে পারি নাহ।তাই এমন মনে হয়।
৬/ তারা চেঞ্জ হোক,ভালোবাসাটা আগের মতো থাকলেই হইলো।দিন শেষে যাতে পাগলামিটাও থাকে।তাহলেই যথেষ্ট।আসলে প্রেম করে প্রেমিক আর প্রেমিকা।ভালোবাসা দুজনের।কিন্তু বিয়ের পর ভালোবাসার ভাগিদার বাড়ে।শ্বশুর,শাশুড়ি,দেবর,ননদ,শালা,শালি,বাচ্চা আরো অনেকেই।
৭/ ডিভোর্স সব বিয়েতেই বেশি হচ্ছে আজকাল।আমরা এখন কাউকেই ছাড় দিতে চাই নাহ,নিজের জেদ ধরে বসে থাকি,নিজের ইগোর কারনে কারো সামনে আমরা কেউই নিজেদের ভুল স্বীকার করে স্যরি অবধি বলতে চাই নাহ।সেক্রিফাইস,কম্প্রোমাইজ করা ভুলে যাচ্ছি আমরা।নিজেদের পছন্দ অপছন্দ চাপিয়ে দিচ্ছি।ব্যক্তি স্বাধীনতা সবাইকে দেয়া উচিত।
৮/ প্রেমের বিয়েতে ডিভোর্স বেশি হয়।কথা সত্য।মুরব্বিরা তাদের অভিজ্ঞতায় ঠিকই বলে।কারন,প্রেমিক প্রেমিকারা চায় প্রেম করার সময় সবকিছু যেমন ছিলো তেমনই থাকুক সব।কিন্তু এটা সম্ভব নাহ।ছেলে বাসার সামনে দাঁড়ায় থাকবে আগের মতো,ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হবে,ঘুরা হবে।এতো সময় কই ভাই?সংসার নাই ? চাকরি নাই?
সারাদিন বইসা প্রেম করলে খাওয়ার টাকা আসবে কোত্থেকে?জামা কাপড় আসবে কোত্থেকে?খাবার রান্না হবে কেমনে?ঘর সংসার গুছাবে কে?সময় দেয়া উচিত।
তবে প্রেমের মতো তা হবে নাহ।খুব স্বাভাবিক।নিজেরা নিজের মতো সময় বের করে নিজেদের মতো কিছু সময় অবশ্যই কাটানো যায়।সারাদিনের কাজের মাঝে চাইলেই কিন্তু প্রিয়জনকে বা প্রিয় মানুষটাকে সময় দেয়া যায়।
ভালো থাকুক সকল ভালোবাসা।ভালোবাসাটা খুব পবিত্রের একটা জায়গা।আমরা এটাকে অপবিত্র না করি।